প্রকাশিত: Tue, Aug 15, 2023 10:53 PM
আপডেট: Thu, Jul 3, 2025 5:02 PM

জামায়াতের তাণ্ডবের কারণে সাঈদীর গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না: ডিএমপি কমিশনার

মাসুদ আলম: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এই জামায়াত নেতার লাশ হস্তান্তর নিয়ে সোমবার রাতে  রাজধানীর শাহবাগ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চালিয়েছে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এজন্য সাঈদীর আজ বুধবার গায়েবানা জানাজার অনুমতি দেওয়া হবে না।

[৩] মঙ্গলবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সাঈদীর মৃত্যু এবং পরবর্তীতে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিক্রিয়া সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

[৪] তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ)  সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে সাঈদী হার্ট অ্যাটাকজনিত কারণে মারা যান। তার মারা যাওয়ার পর তার দুই ছেলে হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। তারা কারা কর্তৃপক্ষের  সঙ্গে কথা বলে পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ পিরোজপুরে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি পায়। এরপর মরদেহের গোসল শেষে পরিবার প্রস্তুতি নেয় পিরোজপুর নিয়ে যাওয়ার। লাশ পিরোজপুরে নেওয়ার প্রস্তুতি নিলে জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মী শাহবাগ ও বিএসএমএমইউ ক্যাম্পাসে  একত্রিত হয়ে জানাজা পড়ার পরে লাশ নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলে। পরের দিন জাতীয় শোক দিবসে বিভিন্ন কর্মসূচি থাকার কারণে পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের রাতে জানাজা পড়ার অনুমতি দেয়া হয়। 

[৫] কমিশনার বলেন, রাত দুইটার দিকে তারা জানাজার পরিবর্তে মুনাজাত করে এবং পরে গায়েবানা জানাজা পড়ে নেওয়ার কথা জানায়। মুনাজাত শেষে লাশ যখন পিরোজপুরের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার জন্য বের করা হয় তখন হাজার হাজার নেতাকর্মী লাশবাহী গাড়ির সামনে শুয়ে পড়ে। তারা লাশবাহী গাড়ির সাথে থাকা পুলিশ সদস্যদের উপর আক্রমণ চালায় ও  তাদের গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। 

[৬] তিনি আরও বলেন, জামায়াত-শিবিরের হামলায় ডিসি রমনা, ডিসি প্রটেকশন ও পুলিশের সিনিয়র অফিসারসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ হামলায় পুলিশের ৫টি গাড়ি ভাঙচুর ও ২টি মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। পুলিশ অসীম ধৈর্য সহকারে কোন শক্তি প্রয়োগ  না করে তাদের এই তাণ্ডব সহ্য করে লাশ নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে। ফজরের নামাজের পর তাদের আবারো জানাজার অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু ফজরের নামাজের পর তারা বিএসএমএমইউ  প্রাঙ্গণ দখল করে নেয় এবং লাশ পিরোজপুরে নিতে বাধা দেয়। সারাদেশ থেকে জামায়াত শিবির ও সাঈদীর যতো সমর্থক আছে সকলকে শাহবাগে একত্রিত হওয়ার জন্য তারা ফেসবুকে প্রচার শুরু করে।

[৭] গোলাম ফারুক বলেন, তখন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পুলিশ বাধ্য হয়ে অত্যন্ত সীমিত আকারে শক্তি প্রয়োগ করে বিএসএমএমইউ  ক্যাম্পাস মুক্ত করে লাশ পিরোজপুরে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। হাসপাতালে অনেক রোগী ভর্তি ছিলো তাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে পুলিশ প্রথম থেকে হাসপাতালে শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত ছিল। 

[৮] পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ হবে পুলিশ তা আগে কেন জানতে পারেনি, এটা গোয়েন্দা ব্যর্থতা কি না জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা গোয়েন্দা তথ্য পেয়েছিলাম জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা জড়ো হচ্ছেন। সাঈদীর দুই ছেলে প্রথম থেকে আমাদের আশ্বস্ত করেছিল আমাদের বাবার মরদেহ আমরা নিয়ে যাব কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। অনেকে মরদেহ দেখার জন্য এসেছেন তাই মানবিক কারণে আমরা প্রথম থেকে কোনো ধরনের অ্যাকশনে যাইনি। কিন্তু জামায়াত-শিবির যে তাদের চরিত্রটা পাল্টায়নি তারা আবারও সেটা প্রমাণ করল। 

[৯] এক্ষেত্রে ডিএমপির সাইবার সেল সক্রিয় ছিল কিনা প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমাদের সাইবার ইউনিট সক্রিয় ছিল। তারা যে বিভিন্ন গুজব ছড়াচ্ছিল সেই তথ্য আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছিলাম। সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া